সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১৬

The Fish which doesn't fear Sharks

হাঙরের আশপাশ থেকে অনেক মাছ দূরে থাকার চেষ্টা করলেও ছোট ছোট কিছু মাছ আছে যাদের পছন্দ করে হাঙর৷ কারণ তারা হাঙরের শরীর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে৷ হাঙরের ত্বকে থাকা ক্ষুদ্র পরজীবী এ সব মাছের খাবার৷ কোরাল রিফ অর্থাৎ প্রবাল-প্রাচীরে একসঙ্গে হাজার হাজার প্রাণী ঠাসাঠাসি করে থাকে৷ জটিল নিয়ম মেনে তারা সেখানে বসবাস করে৷ কে কাকে খাচ্ছে, তার চেয়েও বড় এই নিয়ম৷

কোরাল রিফ সাগরের মধ্যে এক শহরের মতো৷ অতি ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে শুরু করে অবিশ্বাস্য সব বিচিত্র ধরনের মাছের বসবাস ঐ শহরে৷ আশ্চর্য রং আর আকারের জন্য কোরাল রিফের নাম হয়ে গেছে ‘সাগরের রেনফরেস্ট'৷ শিকারি হাঙরের মতো প্রাণীও আছে সেখানে৷প্রবাল প্রাচীরের বাসিন্দারা তাদের রং, আকার ও চলন-বলনের সাহায্যে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ করে৷ যেমন, ক্লিনার ফিশ অদ্ভুতভাবে নড়েচড়ে তার উপস্থিতি জানান দেয়
রিফ সিস্টেমে বিশেষ অবস্থানের কারণে ক্লিনার ফিশ অন্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে৷ শুধুমাত্র তারাই বড় বড় শিকারি মাছের কাছে নির্ভয়ে যেতে পারে৷ এমনকি যখন তারা শিকারি মাছের চোয়ালের মধ্যে কাজ করে তখনও তারা নিরাপদ৷

প্রায় সব সতেজ কোরাল রিফেই ক্লিনার ফিশ থাকে৷ নিজেদের শরীরে ক্লিনার ফিশকে আশ্রয় দিয়ে বিভিন্ন মাছ যেমন পরজীবী প্রাণী ও ত্বকের সমস্যামুক্ত হতে পারে, তেমনি ক্লিনার ফিশও খাবার পেয়ে থাকে৷
হাঙরের চোয়াল পরিষ্কারের জন্য ‘ব়্যাশ'-এর মতো এমন বিশেষজ্ঞ ফিশ প্রয়োজন৷ হাঙরের বড় করে চোয়াল খোলা পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করে৷ অবশেষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে হাঙর তার পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷






Rajia Juthy

Dept of Fisheries ,University Of  Rajshahi

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

‘Survival for the Fittest’ …….:একটি মথের গল্প



ডারউইন এরNATURAL SELECTION’ বুঝানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় শিক্ষকেরা খুব চমকপ্রদ এক গবেষণার কথা বলে থাকেন।ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দী জুড়ে ব্যাপ্ত এই গবেষণা ছিল এক বিশেষ প্রজাতির মথের উপর যার নাম ‘PEPPERED MOTH’। মথ গুলোর গায়ে স্পট বা বিন্দু থাকার কারণে এই নামকরণ। (সংযুক্ত ১ম ছবি)।

কালো এবং সাদা এই দু’ধরণের রঙের এই  প্রজাতির মধ্যে সাদাটির বিশেষ ক্যামফ্লেজ বা ছদ্মবেশ ক্ষমতা আছে , এরা সহজেই গাছের উপর জমে থাকা LICHEN এর রঙের সাথে নিজেকে মিশিয়ে ফেলতে পারে।এর ফলে তারা রক্ষা পায় শিকারীর  হাত থেকে।
কিন্তু কালো মথ গুলোর যেন সহজে শিকারের হাতে ধরা পরে এ কারণে কালো মথদের সংখ্যা ১৮৪৮ সালের দিকে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেতে থাকে।

ঠিক তখনই ইউরোপে ঘটে যাওয়া “INDUSTRIAL REVOLUTION” এর  কারণে যান্ত্রিক সভ্যতার উত্থানের সাথে সাথে চরম মাশুল দিতে হয় পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশ কে। বায়ু দূষণ আর রাসায়নিক দূষণের মিলিত প্রভাবে প্রকটভাবে দূষিত হতে থাকে পৃথিবী, যার ফল গিয়ে পরে ওই PEPPERED MOTH গুলোসহ অনেক প্রানীর উপরে। তাদের আবাস বৃক্ষ গুলো এবং সাদা মথদের ছদ্মবেশে সাহায্য করা LICHEN গুলো অনেকাংশে নষ্ট হয়ে গাছের রঙ কালচে হয়ে ওঠে।

কিছু অদ্ভুত বিষয় এ সময় লক্ষ্য করা যায়. কালো মথগুলোর সংখ্যা আগে কমে গিয়েছিল, এখন আবাস পরিবর্তন হওয়ায় তাদের সংখ্যা আরও কমার কথা। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেখা গেল, ১৮৯০-১৯৫০ পর্যন্ত পাওয়া এই প্রজাতির মথদের ৯৮% ই কালো মথগুলো। সাদাগুলো যেন বেমালুম গায়েব!!!!! তাহলে কি সাদা প্রজাতি উল্টো বিলুপ্ত হয়ে গেল????? এই অদ্ভুত ব্যাপার কেন ঘটল?? কি তার কারণ??
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন পরিবেশের এই পরিবর্তনের কারণে মথ গুলোর এক ধরণের পরিবর্তন হয়েছে, যে কারণে সাদা গুলো টিকতে পারে নি,বিশেষ করে ‘লাইকেন’ গুলোর বিনষ্ট হওয়ার কারণ।  কিন্তু লাইকেনের উপর নির্ভরতা না থাকায় কালগুলো টিকে গিয়েছে গাছের রঙে মিশে। বিজ্ঞানীরা এই পরিবর্তনের নাম দেন INDUSTRIAL MELANISM’.
কিন্তু তাহলে তো এর বিপরীত টাও ঘটা সম্ভব। অর্থাৎ বিশুদ্ধ পরিবেশ ফিরে আসলে সাদা মথের আধিক্য দেখা যাবে।
এর প্রমাণের জন্য বিজ্ঞানীদের অপেক্ষা করতে হয় ১৯৬০ অবধি। ওই সময় পাশ হওয়া ‘AIR CLEAN ACTএর কারণে পরের বছর গুলোতে দূষণের মাত্রা কমতে থাকে ধীরে ধীরে। এক সময় অনেকখানি বিশুদ্ধ হয় পরিবেশ। এবার বিজ্ঞানীদের অপেক্ষা মথ গুলোর কি ঘটে দেখার জন্য। আসলেই কি সাদা মথ ফিরে আসবে???
 আর  তাই যদি হয় তাহলে ডারউইন এর ‘NATURAL SELECTION’ এর বড় একটা প্রমাণ পাওয়া যাবে।
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পাওয়া গেল কাঙ্ক্ষিত ফল।
হ্যাঁ, আসলেই পরিবর্তন হচ্ছে কালো আর সাদা মথের পরিসংখ্যান। বিশুদ্ধ পরিবেশে সাদা মথ কে ছদ্মবেশে সহায়তা করে শিকার এর হাত থেকে বাঁচানো LICHEN এর আবির্ভাব এর সাথে সাথে সাদা মথও ফিরে এসেছে প্রকৃতিতে। আগের মতই কমেছে কালো মথের সংখ্যা।


বর্তমান  এই প্রজাতির ৯০%এর অধিক মথই সাদা মথ, যারা বিশুদ্ধ পরিবেশের সুবিধা গ্রহণ করে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পেরেছে। (সংযুক্ত ২য় চিত্রে কালো মথদের সংখ্যার হ্রাস  সংক্রান্ত গ্রাফ)।





S.M.SHAFI
Dept Of Zoology,University Of Dhaka.

(edited by nazia)

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬

Poison Dart Frog :সুন্দর এবং ভয়ানক


দক্ষিণ ও মধ্য অ্যামেরিকার ঘন জঙ্গলে নানান ধরণের উজ্জ্বল রঙ বিশিষ্ট ব্যাঙ এর দেখা মেলে। এদের শরীরের উজ্জ্বল বা গাঢ় রঙ অন্যান্য প্রাণীদের এটাই নির্দেশ করে যে, কাছে গেলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে যেকারণে অধিকাংশ শিকারী প্রাণীই এদেরকে এড়িয়ে চলে। যদিও Leimadophis epinephelus প্রজাতির সাপের শরীরে এসব বিষ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে যেকারণে এসব সাপেরাই ঐ ব্যাঙের প্রধান শত্রু। Dendrobatidae পরিবারের এসব সদস্যদের শরীরের অংশ তীরের ফলাতে লাগিয়ে আদিবাসীরা নানান প্রাণী শিকার করে বলে এদেরকে Poison Arrow Frog বা Dart-poison frog নামে অভিহিত করা হয়। অনিন্দ্য সুন্দর এসব ব্যাঙের শরীরে প্রাপ্ত বিষের মাত্রা এতোটাই বেশি যে, তা নিমিষেই কয়েকজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে মেরে ফেলতে সক্ষমবাসস্থান ধ্বংসের কারণে এদের সংখ্যা তুলনামূলক হারে কমে যাচ্ছে।

Shawan Chowdhury
University of Dhaka.



ভয়ংকর "Blue Ringed Octopus"



Hapalochlaena গণের অধীনে অক্টোপাসগুলোকে নীল আংটিযুক্ত অক্টোপাস বলে। প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরে অবস্থিত বিভিন্ন কোরালের মধ্যে বাস করা এই অদ্ভুত সুন্দর অক্টোপাসগুলোর তিন থেকে চার প্রজাতি বিদ্যমান। এরা পৃথিবীর অন্যতম বিষাক্ত সামুদ্রিক প্রাণী হিসেবে পরিচিত যদিও এরা আকারে অনেক ছোট এবং সহজেই পোষ মানা প্রকৃতির।
এদের শরীরে নানান আকারের নীল ও কালো আংটির মতোন ছোপ ছোপ এবং হলুদ ত্বক থাকার কারণে সহজেই এদেরকে সনাক্ত করা যায়। কোন কারণে যখন এরা বিরক্ত কিংবা উত্তেজিত হয় তখন এদের বাদামী দাগগুলো আস্তে আস্তে গাঢ় হতে থাকে। সমগ্র শরীরে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি নীল আংটির মতোন ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। এরা ছোট ছোট কাঁকড়া, হারমিট ক্র্যাব এবং চিংড়ি শিকার করে। সাধারণত মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীদের এড়িয়ে চললেও বিপদের গন্ধ পেলে আক্রমণ করতে দ্বিধাবোধ করেনা।
লম্বায় এরা পাঁচ থেকে আট ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। বিষে নিউরোটক্সিনের মাত্রা এতোটাই তীব্র যা কিনা একজন সুস্থ ও পরিণত মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।


Shawan Chowdhury
University of Dhaka

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৬

Dancing Bluestreak cleaner Wrasse Fish


সাগরের বুকে ভাসমান এই রংবেরং এর মাছগুলোর জন্য মুলত সাগর রঙিন। পহেলা ফাল্গুনে যেমন হলুদ রঙের খেলা হয় তেমনি  ভাবে এখানেও রঙের উৎসবে সবাই মাতওয়ারা,এই রঙ তাদের অন্তরে, তাদের শরীরে মিশে থাকা  । এদের মধ্যে খুব প্রতিদিন খুব সকাল বেলাই একদল মাছেরা খেলা সুরু হয়ে উঠে ।এই খেলা নাচের খেলা । শহুরে মানুষ যখন ঘুমে অধর হয়ে থাকে তখনই সমুদ্র  হতে ২০ মিটার গভীরে বাস করা Wrasse মাছগুলো   যেন এভাবে নিজের মনের আনন্দ  নেচে চলে ।আকারে ছোট্টো কাল-নিল রঙের লম্বাটে গড়নের মাছগুলো মুলত বড় কিছু মাছের উদ্দেশে এভাবে উপরে  নিচে তাদের  শরীর ভাসায়ে হেলে দুলে নেচে থাকে।দেখে মনে হই বড় মাছেরা যেন  তাদের মোক্কেল ।বড় মাছেরা তাদের এই  সুন্দর প্রদশন দেখে আকৃষ্ট হয়  এবং স্থির হয়ে আবস্থান করে।ঠিক তখনি  সেই বড় মাছের শরীরে মুখ দিয়ে মাছের শরীরে লেগে থাকা বহিঃপরজীবি ও  মিউকাস  গুলো খেতে শুরু করে।দলের কেউ কেউ আবার মাছের মুখের ভেতর প্রবেশ করে এবং অন্তঃপরজীবি খেয়ে পরিষ্কার করে থাকে ।নিজের শরীর পরিস্কার করতে বড় মাছটি যেন এমনি  কাউকে চেয়েছিল ।ঠিক যেন আমাদের বড় বড় শহরের স্পা এর দোকানগুলোর মতো ।এভাবে তারা একদিনে প্রায় 1200 এর অধিক পরজীবি খেয়ে থাকে।

S M Shafi
Dept of Zoology,University of Dhaka.




বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৬

ভোঁদড়ের মজার গল্প

ছোটবেলায় খুব সম্ভোবত "আইরে আই টিয়ে" কবিতা থেকে ভোঁদড় নামটির সাথে আমাদের পরিচয় ।ভোঁদড়  আধা জলচর, মৎস্যভভূক প্রাণী .সাধারণত লিপ্তপদী, মানে হাঁসের পায়ের মতো আঙ্গুলগুলো পাতলা পর্দা দিয়ে জোড়া লাগানো । শরীর লম্বাটে ও লেজ মোটা আকারের, পায়ে ধারালো নখযুক্ত থাবা আছে। সাঁতার কাটার সময়ে এদের নাক ও কানের ফুটো বন্ধ থাকে। নাকের ডগায় লম্বা গোঁফের মতো খাড়া সংবেদনশীল লোম থাকে। যা পানির নীচে শিকার ধরতে সহায়তা করে .গোঁফ খাড়া, তাই জলে ভিজে গায়ে লেপ্টে যায় না, ফলে ঘোলা জলে এই স্পর্শকাতর গোঁফ শিকারের উপস্থিতি জানান দেয়। হাত-পায়ের পাতাও খুব স্পর্শকাতর। ফলেকাদায় লুকানো ঝিনুক, শামুক, চিংড়ি, কাঁকড়া সহজেই ধরতে পারে । শক্তিশালী ছুঁচালো দাঁত আর পিচ্ছিল মাড়ি শিকার ধরতে ও মাছের মুড়ো চিবোতে অত্যন্ত কার্যকর। দেহে দুই স্তর লোম রয়েছে। প্রথম স্তর আকারে ছোট, কোমল এবং তাপরোধী। এই অন্তঃলোম বাতাস ধরে রেখে পানির নীচে এদের দেহ উষ্ণ ও শুকনো রাখে।এই লোমগুলো পানিরোধী। দ্বিতীয় স্তরের লোম লম্বা, এগুলো জলে ভিজে ওঠে। ভোঁদড়ের গন্ধ বিকট, অনেক টা বাঘের গন্ধের মতো . সামুদ্রিক ভোঁদড় পাথরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এরা সামনের পা দিয়ে পাথর টেনে তুলে তার সহায়তায় শামুক, ঝিনুক ইত্যাদির খোল ভেঙ্গে থাকে। ভাসমান অবস্থায় বুকের উপরে পাথর রেখে তাকে কামারের নেহাইয়ের মতো ব্যবহার করে। শীতল পানিতে বসবাসরত ভোঁদড় শরীর উষ্ণ রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। সামুদ্রিক ভোঁদড়কে তাপমাত্রাভেদে তাদের ওজনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করতে হয়।
এরা সমাজবদ্ধ জীব। বেশ ক্রীড়াপ্রবণ ও বুদ্ধিমান এই প্রাণীগুলো বেশ বন্ধুবৎসল এবং সহজেই পোষ মানে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও সুন্দরবনের কিছু এলাকায় পোষা ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করতেও দেখা যায়।
বেশিরভাগ ভোঁদড় জলাশয়ের কিনারে, গর্তে বাস করে। শিকার করা বা ভ্রমণের উদ্দেশ্য ছাড়া এরা পানিতে নামে না, ডাঙাতেই সময় কাটায়। তবে সামুদ্রিক ভোঁদড়রা সমুদ্রে, জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে।
জোয়ারপ্রবণ এলাকায় বাসা তৈরি করে জোয়ার-সীমানার উঁচুতে কোনো বড় গাছের তলায় গর্ত করে। গর্তের কয়েকটি মুখ থাকে। গর্তে ঢুকতে হয় জলের তলা দিয়ে। কিন্তু বাচ্চা প্রসবের জায়গাটি থাকে শুকনো এলাকায়।
সামুদ্রিক ভোঁদড় ছাড়া অন্য কোনো ভোঁদড় লবণ সহ্য করতে পারে না.
বাংলাদেশের বিলে চরা ভোঁদড় কে ধাইরা নামে ডাকে.


Sultan Ahmed
Dept. of Zoology,University Of Dhaka.




Blue Carbon


আমাদের সকলেরই জানা আছে Marine ecosystem / coastal ecosystem/ সমুদ্র অঞ্চলীয় বাস্তুতন্ত্র, বাস্তুতন্ত্রগুলোর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় হওয়ায় এই পৃথিবী রক্ষায় তা বেশ বড়সড় একটা ভূমিকা পালন করে।
এই বাস্তুতন্ত্রের আরও একটি বড় ভূমিকা আমাদের অনেকেরই অজানা, আর তা হল 'ব্লু কার্বন' সঞ্চয়ে এর ভূমিকা।
‘ব্লু কার্বন’ নামটা শুনে ভ্রুটা কুঁচকে গেল একটু??!! এটা আবার কী!!??
আসলে এই শব্দটা অনেকের কাছেই অপরিচিত।
নামে ব্লু হলেও নীল রঙ নয় এটির। মূলত সামুদ্রিক অঞ্চল, মানে-
• সমুদ্র উপকুলীয় লবণাক্ত ভূমি
• ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল
• সমুদ্র তৃণভূমি আঞ্চল ,
এই তিন অঞ্চল একত্রে মিলে যে কার্বন জমা করে রাখে,তার পরিচয় দিতেই এই ‘ব্লু কার্বন’ নামটি ব্যাবহার করা হয়। অর্থাৎ জলের সাথে সম্পর্ক আছে বলেই ‘ব্লু’ নামটি দেয়া।
ব্লু কার্বন নিয়ে আর একটু বিস্তারিত বলা যাক ... ব্লু কার্বন কোস্টাল কার্বন নামেও পরিচিত। এই তিন সামুদ্রিক অঞ্চল বিপুল পরিমাণে কার্বন সঞ্চয় করে রাখে, তাও মাটির নিচে। মাটির প্রায় ৩০ মিটার নিচ পর্যন্ত সঞ্চিত থাকে এই কার্বন। হাজার হাজার বছর ধরে জমা থাকে মাটির নিচে। ভূগর্ভে সঞ্চিত হবার দরুন বায়ুমণ্ডলে মুক্ত হয়ে অনর্থ ঘটানোর সুযোগ পায় না এরা। এর ফলে ওইসব অঞ্চলের বায়ুমণ্ডল বেশ ভালো রকমের বিশুদ্ধ থাকে।
এখন কথা হচ্ছে এই বস্তু আমাদের কি কাজে আসবে??? আদৌ কাজে আসবে কিনা??
উত্তর হল, এই ব্লু কার্বন বেশ উপকারি আমাদের এই পৃথিবীর জন্য। এখন দেখা যাক কিভাবে??
• প্রথম কথা হচ্ছে, ভূগর্ভে জমা থাকার দরুন এরা সহজে মুক্ত হতে পারে না। আবার, এই তিন সামুদ্রিক অঞ্চলের পরিমাণ স্থলজ ও অন্যান্য জলজ বাস্তুতন্ত্রের চেয়ে অনেক বেশি। স্বভাবতই এদের কার্বন জমা রাখার পরিমাণও অনেক বেশি। স্থলজ অঞ্চলের সঞ্চিত কার্বন ভূগর্ভের চেয়ে উপরিভাগে বেশি থাকে। তাই এদের মুক্ত হওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা দুটোই বেশি। এখন, আমরা যদি এই সামুদ্রিক অঞ্চলের পরিমাণ বাড়াতে এবং সংরক্ষণ করতে পারি, তাহলে বলা যায় বিশ্বের এক নং সমস্যা ‘গ্লোবাল ওয়ারমিং’ বা ‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’ এর করাল গ্রাস থেকে অনেকখানি নিরাপদ থাকবে এই পৃথিবী।
• আরেকটি যে সুবিধা আমরা পাব তা হল, হাজার হাজার বছর মাটির নিচে জমা থাকার দরুন এই কার্বন ধীরে ধীরে জীবাশ্ম জ্বালানী তে পরিণত হবে যা ভবিষ্যতে জ্বালানীর চাহিদা পূরণ করবে।
অর্থাৎ ব্লু কার্বন এর সঞ্চয় বৃদ্ধি করলে আখেরে লাভই হবে আমাদের। ঠিক এই লক্ষেই কাজ করার জন্য শুরু হয়েছে ‘blue carbon initiative’ নামক প্রকল্প, যার কাজ হচ্ছে পৃথিবী ব্যাপী ব্লু কার্বন এর এই ধারনা ছড়িয়ে দিতে।
তবে সব কিছুরই একটা কিন্তু থাকে... এখানেও আছে। সমুদ্র অঞ্চলে কার্বনের এই সংগ্রহশালা যেমন বিশাল, এই অঞ্চল ধ্বংস হলে এই বিশাল পরিমাণ কার্বন বায়ুমণ্ডলে ঘুরে বেড়াবে। আর তার পরিণতি কি হবে সহজেই অনুমেয় frown emoticon
আমরা কেউই চাই না এই অঞ্চল ধ্বংস হোক, বরং এর সংরক্ষণ হোক এটাই আমাদের কাম্য..

Nazia hossain,
Dept of Zoology,University of Dhaka