বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৬

ভোঁদড়ের মজার গল্প

ছোটবেলায় খুব সম্ভোবত "আইরে আই টিয়ে" কবিতা থেকে ভোঁদড় নামটির সাথে আমাদের পরিচয় ।ভোঁদড়  আধা জলচর, মৎস্যভভূক প্রাণী .সাধারণত লিপ্তপদী, মানে হাঁসের পায়ের মতো আঙ্গুলগুলো পাতলা পর্দা দিয়ে জোড়া লাগানো । শরীর লম্বাটে ও লেজ মোটা আকারের, পায়ে ধারালো নখযুক্ত থাবা আছে। সাঁতার কাটার সময়ে এদের নাক ও কানের ফুটো বন্ধ থাকে। নাকের ডগায় লম্বা গোঁফের মতো খাড়া সংবেদনশীল লোম থাকে। যা পানির নীচে শিকার ধরতে সহায়তা করে .গোঁফ খাড়া, তাই জলে ভিজে গায়ে লেপ্টে যায় না, ফলে ঘোলা জলে এই স্পর্শকাতর গোঁফ শিকারের উপস্থিতি জানান দেয়। হাত-পায়ের পাতাও খুব স্পর্শকাতর। ফলেকাদায় লুকানো ঝিনুক, শামুক, চিংড়ি, কাঁকড়া সহজেই ধরতে পারে । শক্তিশালী ছুঁচালো দাঁত আর পিচ্ছিল মাড়ি শিকার ধরতে ও মাছের মুড়ো চিবোতে অত্যন্ত কার্যকর। দেহে দুই স্তর লোম রয়েছে। প্রথম স্তর আকারে ছোট, কোমল এবং তাপরোধী। এই অন্তঃলোম বাতাস ধরে রেখে পানির নীচে এদের দেহ উষ্ণ ও শুকনো রাখে।এই লোমগুলো পানিরোধী। দ্বিতীয় স্তরের লোম লম্বা, এগুলো জলে ভিজে ওঠে। ভোঁদড়ের গন্ধ বিকট, অনেক টা বাঘের গন্ধের মতো . সামুদ্রিক ভোঁদড় পাথরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এরা সামনের পা দিয়ে পাথর টেনে তুলে তার সহায়তায় শামুক, ঝিনুক ইত্যাদির খোল ভেঙ্গে থাকে। ভাসমান অবস্থায় বুকের উপরে পাথর রেখে তাকে কামারের নেহাইয়ের মতো ব্যবহার করে। শীতল পানিতে বসবাসরত ভোঁদড় শরীর উষ্ণ রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। সামুদ্রিক ভোঁদড়কে তাপমাত্রাভেদে তাদের ওজনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করতে হয়।
এরা সমাজবদ্ধ জীব। বেশ ক্রীড়াপ্রবণ ও বুদ্ধিমান এই প্রাণীগুলো বেশ বন্ধুবৎসল এবং সহজেই পোষ মানে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও সুন্দরবনের কিছু এলাকায় পোষা ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করতেও দেখা যায়।
বেশিরভাগ ভোঁদড় জলাশয়ের কিনারে, গর্তে বাস করে। শিকার করা বা ভ্রমণের উদ্দেশ্য ছাড়া এরা পানিতে নামে না, ডাঙাতেই সময় কাটায়। তবে সামুদ্রিক ভোঁদড়রা সমুদ্রে, জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে।
জোয়ারপ্রবণ এলাকায় বাসা তৈরি করে জোয়ার-সীমানার উঁচুতে কোনো বড় গাছের তলায় গর্ত করে। গর্তের কয়েকটি মুখ থাকে। গর্তে ঢুকতে হয় জলের তলা দিয়ে। কিন্তু বাচ্চা প্রসবের জায়গাটি থাকে শুকনো এলাকায়।
সামুদ্রিক ভোঁদড় ছাড়া অন্য কোনো ভোঁদড় লবণ সহ্য করতে পারে না.
বাংলাদেশের বিলে চরা ভোঁদড় কে ধাইরা নামে ডাকে.


Sultan Ahmed
Dept. of Zoology,University Of Dhaka.




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন